চতুর্থ অধ্যায় : প্রতিবাদী ধর্ম-আন্দোলন
Protest Movement : প্রতিবাদী ধর্ম-আন্দোলন
প্রতিবাদী ধর্ম-আন্দোলনের নেতৃত্ব কারা দিয়েছিল ?
উঃ- ক্ষত্রিয়রা।
দুটি অগ্রণী প্রতিবাদী ধর্মমত বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গৌতমবুদ্ধ ও মহাবীর কোন বর্গের (জাতির) লোক ছিল ?
উঃ- গৌতমবুদ্ধ ও মহাবীর ছিলেন ক্ষত্রিয় রাজকুমার।
বৈদিক ধর্মে কোন যাত্রা নিষিদ্ধ ছিল ?
উঃ- সমুদ্রযাত্রা।
বৈশ্যদের একাংশ যারা সুদের বিনিময়ে অর্থঋণ দিত তাদের কি বলা হাত ?
উঃ- শ্রেষ্ঠী।
জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মমতের মূল কথা কি ?
উঃ- জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মমতের মূল কথা হল অহিংসা।
জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের উদ্ভব হয়েছিল কিভাবে বা কি কারনে ?
উঃ- খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতে বাহ্মণ্য-ধর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ধর্ম হিসেবে জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের উদ্ভব ঘটেছিল।
Protest Movement : প্রতিবাদী ধর্ম-আন্দোলন
প্রতিবাদী ধর্ম-সম্প্রদায়গুলির মধ্যে প্রাচীনতম কোনটি ?
উঃ- আজীবিক সম্প্রদায় প্রাচীনতম।
আজীবিক সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন ?
উঃ- গোশল। (প্রথম জীবনে তিনি জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীরের বন্ধু ছিলেন।
ধর্ম বিষয়ে আজীবিকরা কেমন ছিল ?
উঃ- আজীবিকরা ছিলেন পুরোপুরি নাস্তিক এবং অদৃষ্টবাদী।
বর্ধমান মহাবীর কোন সময় জন্মগ্রহন করেন ?
উঃ- বর্ধমান মহাবীর আনুমানিক খ্রী: পূ: 540 অব্দে এক ক্ষত্রিয় বংশে জন্মগ্রহণ করেন।
মহাবীরের পিত ও মাতার নাম কি ?
উঃ- পিতার নাম সিদ্ধার্থ ও মাতার নাম ত্রিশলা।
মহাবীরের স্ত্রীর নাম কি ?
উঃ- যশোদা।
জৈন নামের উৎপত্তি কোন শব্দ থেকে ?
উঃ- জিন শব্দ থেকে।
‘চতুর্যাম’ কি ?
উঃ- পার্শ্বনাথ প্রচারিত চারটি মূল নীতি হল – ক. অহিংসা, খ. মিথ্যা না বলা, গ. চুরি না-করা (অচৌর্য) এবং ঘ. পরদ্রব্য গ্রহণ না করা (অপরিগ্রহ)।এগুলি ‘চতুর্যাম’ নামে পরিচিত।
‘পঞ্চমহাব্রত’ কি ?
উঃ- মহাবীর ‘চতুর্যাম’ -এর সঙ্গে ‘ব্রহ্মচর্য’ নামে আরো একটি নীতি যোগ করেন। এই পাঁচটি (‘চতুর্যাম’ -এর চারটি এবং ব্রহ্মচর্য ) নীতিকে একসঙ্গে বলা হত ‘পঞ্চমহাব্রত’ ।
জৈনধর্মে ঈশ্বরের অস্তিত্ব কি স্বীকার করা হত ?
উঃ- জৈনধর্মে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়নি।
Protest Movement : প্রতিবাদী ধর্ম-আন্দোলন
‘মোক্ষ’ কথার অর্থ কি ?
উঃ- মুক্তিলাভ।
‘ত্রিরত্ন’ কি ?
উঃ- মুক্তিলাভের উপায় হিসেবে মহাবীর যে তিনটি পথ নির্দেশ করেছেন তা হল – সৎ-বিশ্বাস, সৎ-আচরণ ও সৎ-জ্ঞান। এই তিনটি নীতিকে ‘ত্রিরত্ন’ বলা হয়।
‘দিগম্বর’ কাদের বলা হাত ?
উঃ- ভদ্রবাহুর নেতৃত্বে যারা মহাবীর প্রচারিত সম্পূর্ণ নগ্নদেহে সাধনার নীতি গ্রহণ করেন তাদের দিগম্বর বলা হত।
‘শ্বেতাম্বর’ কাদের বলা হত ?
উঃ- স্থূলভদ্রের নেতৃত্বে যে সকল জৈন মগধে থেকে যান এবং একখন্ড শ্বেতবস্ত্র পরিধান করতেন তাদের শ্বেতাম্বর বলা হাত।
জৈনদের প্রথম লিখিত ধর্মগ্রন্থ কোনটি ?
উঃ- প্রথম ভদ্রবাহু রচিত – ‘কল্পসূত্র’ ।
‘দ্বাদশ অঙ্গ’ কি ?
উঃ- ‘কল্পসূত্র’ -তে চৌদ্দটি পর্বে মহাবীরের বাণী সংকলিত আছে। পরবর্তীকালে এটি বারোটি খন্ডে সংকলিত হয়। এই বার খন্ডের সংকলনকে ‘দ্বাদশ অঙ্গ’ বলা হয়।
জৈনধর্মগ্রন্থ কোন ভাষায় লিখিত ?
উঃ- প্রাকৃত ভাষায়।
গৌতমবুদ্ধের সমসাময়িক চীন ও পারস্যের দুজন প্রখ্যাত ধর্মপ্রচারকের নাম কি ?
উঃ- কনফুসিয়াস এবং জরথ্রুষ্ট।
গৌতম বুদ্ধ কখন এবং কোথায় জন্মগ্রহন করেন ?
উঃ- আনুমানিক 566 খ্রীষ্ট পূর্বাব্দে কপিলাবস্তু নগরের কাছে ‘লুম্বিনী’ উদ্যানে বুদ্ধের জন্ম হয়।
গৌতম বুদ্ধের পিতা ও মাতার নাম কি ?
উঃ- পিতার নাম শুদ্ধোধন এবং মাতার না মায়াদেবী।
গৌতমবুদ্ধের পিতা কে ছিলেন ?
উঃ- গৌতম বুদ্ধের পিতা শুদ্ধোধন ছিলেন ক্ষত্রিয় শাক্য-জাতির নেতা।
গৌতম বুদ্ধের বাল্য নাম কি ছিল ?
উঃ- সিদ্ধার্থ।
গৌতমবুদ্ধের স্ত্রীর না কি ?
উঃ- গোপা বা যশোধরা।
সিদ্ধার্থ বা গৌতম বুদ্ধের আর এক নাম গৌতম কেন ?
উঃ- তার মা মারা যাওয়ার পর বিমাতা ও মাতৃস্বসা গৌতমী তাকে লালন পালন করেন। তাই তার আর এক নাম গৌতম।
গৌতম বুদ্ধের পুত্রের নাম কি ?
উঃ- রাহুল।
‘মহাভিনিস্ক্ৰমন’ কি ?
উঃ- বৌদ্ধগ্রন্থে গৌতম বুদ্ধের গৃহত্যাগের ঘটনা ‘মহাভিনিস্ক্ৰমন’ নাম পরিচিত।
গৃহত্যাগের পর গৌতম বুদ্ধ কার কাছে শিষ্যত্ব নেন ?
উঃ- আলারা কালামা নামে এক ঋষির কাছে।
গৌতম বুদ্ধ কোথায় বোধি বা দিব্যজ্ঞান লাভ করেন ?
উঃ- বুদ্ধগয়ার কাছে উরুবিল্ব নামক স্থানে বোধিবৃক্ষের তলায়।
বোধি লাভের পর গৌতম কি নাম পরিচিত হন ?
উঃ- ‘বুদ্ধ’ (জ্ঞানী) এবং ‘তথাগত’ (যিনি সত্যের সন্ধান পেয়েছেন ) ।
Protest Movement : প্রতিবাদী ধর্ম-আন্দোলন
‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ কি ?
উঃ- পরমজ্ঞান লাভ করার পর বুদ্ধ বারাণসীর কাছে তারকনাথে ‘পঞ্চভিক্ষু’ অর্থাৎ পাঁচজন সন্যাসীর কাছে তাঁর লব্ধ জ্ঞান বিতরণ করেন। এই ঘটনা ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ নাম খ্যাত।
বুদ্ধের শিষ্যরা কটি শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল ?
উঃ- দুটি শ্রেণীতে। উপাসক ও ভিক্ষু।
‘উপাসক’ কাদের বলা হত ?
উঃ- যাঁরা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেও সংসারধর্ম পালন করতেন তাঁরা হলেন ‘উপাসক’।
‘ভিক্ষু’ কাদের বলা হত ?
উঃ- যাঁরা সন্ন্যাস গ্রহণ করতেন তাঁরা হলেন ‘ভিক্ষু’।
বুদ্ধদেব কোথায় দেহত্যাগ করেন ?
আনুমানিক খ্রিস্ট পূর্ব 486 অব্দে বর্তমান উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার কুশীনগরে বুদ্ধদেব দেহত্যাগ করেন।
বুদ্ধদেব মানুষকে কটি ‘আর্যসত্য’ উপলব্ধি করার পরামর্শ দিয়েছেন ?
উঃ- চারটি।
অষ্টাঙ্গিক মার্গ কি ?
উঃ- আসক্তি-মুক্ত হয়ে নির্বাণ লাভের জন্য বুদ্ধদেব আটটি পথ অনুসরণ করতে বলেছেন। এই আটটি পথ হল – সৎ-বাক্য, সৎ-কর্ম, সৎ-সংকল্প, সৎ-চেষ্টা, সৎ-জীবিকা, সৎ-চিন্তা, সৎ-চেতনা ও সৎ-দৃষ্টি। এগুলিকে অষ্টাঙ্গিক মার্গ বলা হয়।
‘মধ্যপন্থা’ বা মঝঝিম পন্থা কি ?
উঃ- বুদ্ধের নির্দেশিত কর্মগুলির মধ্যে যেমন কর্ম ভোগের প্রকাশ ছিল না, তেমনি ছিলনা কঠোর কৃচ্ছসাধন। তাই এগুলি ‘মধ্যপন্থা’ বা মঝঝিম পন্থা নামে পরিচিত।
‘পঞ্চশীল’ কি ?
উঃ- বুদ্ধদেব তাঁর অনুগামীদের কয়েকটি নৈতিক আচরণবিধি পালনের পরামর্শ দিয়েছেন, যথা – চুরি না-করা, ব্যভিচারী না-হওয়া, অসত্য পরিহার করা, হিংসা না-করা এবং অন্যায় না করা। এই নীতিগুলি ‘পঞ্চশীল’ নামে পরিচিত।
কোথায় প্রথম ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ (সম্মেলন) আহূত হয় ?
উঃ- বুদ্ধের দেহত্যাগের পরে রাজগৃহে প্রথম ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ (সম্মেলন) আহূত হয়।
ভারতে মোট কয়টি ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ (সম্মেলন) অনুষ্ঠিত হয় ?
উঃ- চারটি।
ভারতে কোথায় কোথায় ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ অনুষ্ঠিত হয় ?
উঃ- প্রথম ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ : অজাতশত্রুর আমলে মহাকাশ্যপের নেতৃত্বে রাজগৃহে।
দ্বিতীয় ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ : কালাশোকের আমলে বৈশালীতে।
তৃতীয় ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ : অশোকের আমলে পাটলিপুত্রে।
চতুর্থ ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ : কুষাণ সম্রাট কণিষ্কের আমলে কাশ্মীরে বা জলন্ধরে।
‘ত্রিপিটক’ কি ?
উঃ- প্রথম ‘বৌদ্ধ-সঙ্গীতি’ -তে বুদ্ধের উপদেশগুলি তিনটি খন্ডে সংকলিত করা হয়। খন্ডগুলি হল – বিনয়পিটক, সুত্তপিটক ও অভিধর্মপিটক। তিনটি পিটক একত্রে ‘ত্রিপিটক’ নাম খ্যাত।
খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে বৌদ্ধরা কটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায় ?
উঃ- দুটি সম্প্রদায়ে। যথা – হীনযান ও মহাযান।
জৈনধর্মের প্রথম তীর্থঙ্কর কাকে বলা হয় ?
উঃ- ঋষভনাথ -কে।
শেষ জৈন তীর্থঙ্করের নাম কি ?
উঃ- বর্ধমান মহাবীর।
মহাবীর জৈনদের কত তম তীর্থঙ্কর ?
উঃ- 24 -তম তীর্থঙ্কর।
পার্শ্বনাথ কে ছিলেন ?
জৈনধর্মের 23 -তম তীর্থঙ্কর।
মহাবীরের অব্যবহিত আগের তীর্থঙ্করের নাম কি ?
উঃ- পার্শ্বনাথ।
জৈনধর্মের প্রবর্তক কে ?
উঃ- বর্ধমান মহাবীর।
মহাবীরের অনুগামীদের কি বলা হয় ?
উঃ- জৈন।
জৈনধর্মের মূল প্রচারকদের কি বলা হয় ?
উঃ- তীর্থঙ্কর।
জৈনদের একটি প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম কি ?
উঃ- দ্বাদশ অঙ্গ।
মহাবীর কোথায় দেহত্যাগ করেন ?
উঃ- বিহারের পাব নামক স্থানে।
বুদ্ধদেবের দেহরক্ষাকে বৌদ্ধগণ কি বলেন ?
উঃ- মহাপরিনির্বাণ।
ত্রিপিটক কোন ভাষায় লিখিত ?
উঃ- পালি ভাষায়।
কোন গ্রন্থে বুদ্ধের পূর্বজন্মের কাহিনী লেখা আছে ?
উঃ- জাতকে।
General Study
History
-
History :ভৌগোলিক পরিবেশ ও ইতিহাস : Geography & History : Chapter 1
-
Dwan of Indian Civilization : ভারতীয় সভ্যতার উদয় : Indus Valley Civilization : Chapter 2
-
The Vedic age : বৈদিক যুগ : Chapter 3
One thought on “Protest Movement : প্রতিবাদী ধর্ম-আন্দোলন : Chapter 4”